Advertisement

Responsive Advertisement

শিল্পের প্রতি ভালবাসা

Ad code

 



নিসর্গ শহরে আরিফ এবং সোহা বসবাস করত। আরিফ একজন প্রতিভাবান সঙ্গীতশিল্পী এবং সোহা একজন চিত্রশিল্পী। তাদের পরিচয় হয়েছিল একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে, যেখানে আরিফ তার গানের মাধ্যমে সবার মন জয় করে নেয়। সোহা আরিফের গান শুনে মুগ্ধ হয়ে যায় এবং সেদিনই তাদের প্রথম কথা হয়। 


দুজনের সৃষ্টিশীল মন এবং শিল্পের প্রতি ভালবাসা তাদের খুব তাড়াতাড়ি কাছাকাছি নিয়ে আসে। আরিফের গানের প্রতিটি নোট এবং সোহার তুলি দিয়ে আঁকা প্রতিটি ছবি তাদের প্রেমের গভীরতাকে প্রকাশ করত। তারা একে অপরকে ভালবাসতে শুরু করে এবং প্রতিজ্ঞা করেছিল যে তারা সারাজীবন একসাথে থাকবে।


কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস তাদের জীবনের গল্পে একটি করুণ মোড় নিয়ে আসে। একদিন, সোহা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং ডাক্তাররা তাকে একটি দুরারোগ্য ব্যাধি হিসেবে চিহ্নিত করেন। সোহা এই খবর শুনে ভেঙে পড়ে, কিন্তু আরিফ তাকে প্রতিশ্রুতি দেয় যে সে সবসময় তার পাশে থাকবে।


আরিফ প্রতিদিন সোহাকে হাসপাতালে দেখতে যেত এবং তার জন্য গান গাইত। সোহা আরিফের গানে স্বস্তি পেত এবং তার ব্যথা কিছুটা কমে যেত। কিন্তু ধীরে ধীরে সোহার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। 


একদিন, সোহা আরিফকে বলল, "আরিফ, যদি আমার সময় এসে যায়, তাহলে তুমি কি আমার শেষ ইচ্ছা পূরণ করবে?"


আরিফ চোখে জল নিয়ে বলল, "হ্যাঁ, সোহা। তুমি যা বলবে আমি তাই করব।"


সোহা তার হাতে একটি চিঠি তুলে দিয়ে বলল, "এই চিঠিতে আমার শেষ ইচ্ছা লেখা আছে। আমার মৃত্যুর পর তুমি এটি পড়বে।"


কিছুদিন পর, সোহা চিরতরে চোখ বন্ধ করে। আরিফ শোকের সাগরে ডুবে যায়, কিন্তু সোহার শেষ ইচ্ছা পূরণের জন্য সে নিজেকে শক্ত করে তোলে। চিঠিটি খুলে আরিফ পড়তে শুরু করে:


"প্রিয় আরিফ,


তুমি জানো আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি। আমি চাই তুমি আমার মৃত্যুর পরেও তোমার গান চালিয়ে যাও। তোমার গানের মাধ্যমে তুমি আমাকে জীবিত রাখবে। আমি চাই তুমি সুখী হও এবং জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করো। 


তোমার সোহা।"


আরিফ সোহার ইচ্ছা পূরণ করার জন্য নিজেকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করে। সে আবার গান গাইতে শুরু করে এবং তার প্রতিটি গানে সোহাকে স্মরণ করে। সোহা আরিফের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকে এবং তার সুরের মধ্যে জীবিত থাকে।


এইভাবেই আরিফ এবং সোহার ভালোবাসার গল্পটি করুণ হলেও, তাদের প্রেমের গভীরতা এবং ত্যাগের মাধ্যমে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকে।

Post a Comment

0 Comments