Advertisement

Responsive Advertisement

Ad code

শাশ্বত প্রেমের গল্প: শুভ আর আয়েশা

 

শাশ্বত প্রেমের গল্প: শুভ আর আয়েশা


মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত শান্ত শহর সোনারগাঁয়ে এক যুবক বাস করতো, যার নাম শুভ। তার উদার হৃদয় এবং শিল্পী মন তাকে সকলের প্রিয় করে তুলেছিল। শুভ তার দিনগুলো কাটাতো শহরের সুন্দর দৃশ্যপট আঁকতে এবং চারপাশের সরলতা ও সৌন্দর্যে অনুপ্রাণিত হয়ে কবিতা লিখতে।

একদিন, একটি হালকা বাতাসের বিকেলে, শুভ সূর্যাস্তের রঙিন দৃশ্য আঁকতে ব্যস্ত ছিল। তখন সে লক্ষ্য করলো নদীর ধারে বসে এক তরুণী বই পড়ছে। তার লম্বা চুল বাতাসে উড়ছিল এবং তার চোখে ছিল কৌতূহল এবং বুদ্ধিমত্তার ঝিলিক। তার উপস্থিতিতে মুগ্ধ হয়ে শুভ বারবার তার দিকে তাকাচ্ছিলো, যদিও সে নিজের আঁকাআঁকি চালিয়ে যাচ্ছিল।

দিন গড়াতে লাগলো, এবং শুভ নিজেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় নদীর ধারে যেতে দেখলো, আশায় যে সেই মেয়েটিকে আবার দেখতে পাবে। একদিন, সাহস সঞ্চয় করে সে তার কাছে এগিয়ে গেল।

"হ্যালো, আমি লক্ষ্য করেছি যে তুমি নদীর ধারে বই পড়তে ভালোবাসো," শুভ বললো, তার কণ্ঠে কোমলতা ও আন্তরিকতা। "আমার নাম শুভ। আমি একজন শিল্পী।"

মেয়েটি তাকিয়ে থাকলো, তাদের চোখে চোখ পড়লো। "হ্যালো, শুভ। আমি আয়েশা। আমি এখানে বই পড়তে ভালোবাসি; এটি খুবই শান্তিপূর্ণ।"

সেই মুহূর্ত থেকে, শুভ আর আয়েশার মধ্যে একটি সুন্দর বন্ধুত্ব জন্ম নিল। তারা অনেক সময় কাটাতো নিজেদের স্বপ্ন, প্রিয় বই এবং সোনারগাঁয়ের গোপন সৌন্দর্য নিয়ে কথা বলতে। শুভ প্রায়ই আয়েশার পড়া অবস্থায় তাকে আঁকতো, তার মনের সৌন্দর্য তার শিল্পকর্মে তুলে ধরতো।

বর্ষাকাল আসার সাথে সাথে, শহরটি সবুজে আবৃত হয়ে গেল এবং নদী জীবন নিয়ে প্রবাহিত হতে লাগলো। এক বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায়, শুভ আর আয়েশা একটি বড় বটগাছের নিচে আশ্রয় নিল। বৃষ্টি তাদের চারপাশে পড়ছিল, একটি সুরেলা সঙ্গীত সৃষ্টি করছিল।

"আয়েশা," শুভ বললো, তার হৃদয় দ্রুত চলছিল, "আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই। তোমার সাথে দেখা হওয়া আমার জীবনের সবচেয়ে অসাধারণ ঘটনা। তুমি প্রতিদিন আমাকে অনুপ্রাণিত করো তোমার দয়া এবং আবেগ দিয়ে। আমি মনে করি... আমি মনে করি আমি তোমাকে ভালোবাসি।"

আয়েশার চোখ আনন্দে ভরে উঠলো। "শুভ, আমি অনেক দিন ধরে একই অনুভূতি পোষণ করছি। তুমি আমার জীবনে এতটা সুখ নিয়ে এসেছ। আমিও তোমাকে ভালোবাসি।"

বটগাছের নিচে, বৃষ্টির মাঝে, শুভ আর আয়েশা তাদের প্রথম চুম্বন বিনিময় করলো, তাদের প্রেমকে একটি প্রতিশ্রুতি দিয়ে সিলমোহর করলো যে তারা সবসময় একে অপরের পাশে থাকবে।

বছর কেটে গেল, আর তাদের প্রেম আরও গভীর হলো। শুভর আঁকা চিত্রকলাগুলো স্বীকৃতি পেল, আর আয়েশা তাদের সম্প্রদায়ের প্রিয় শিক্ষিকা হয়ে উঠলো। তারা একসাথে একটি জীবন গড়লো, যেখানে ছিল শিল্প, সাহিত্য এবং একে অপরের প্রতি অটুট সমর্থন।

এবং তাই, সোনারগাঁয়ের হৃদয়ে, শুভ আর আয়েশার প্রেমের গল্প ফুলে ফেঁপে উঠলো, প্রেমের শক্তি এবং সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত স্থানে নিজের আত্মাকে খুঁজে পাওয়ার সৌন্দর্যের একটি প্রমাণ হয়ে।

Post a Comment

0 Comments